Skip to main content

মাওলানা শাহ্ কারামত আলী জৈনপুরী রহ. জীবনী ১ম পর্ব

জন্মকাল———

আল্লাহর মনোনীত ধর্ম ইসলাম । শেষ নবী হচ্ছেন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাঁর পরে কোন নবী বা রাসূল এ পৃথিবীতে ধর্ম প্রচার করতে আগমন করবেন না । কিন্তু নবী রাসূলদের অবর্তমানে একটি কালো যুগ-সন্ধিক্ষণে মানুষ যখন ধর্মীয় অনুশাসন ভুলে গিয়ে পাপাচার ও ব্যাভিচারে লিপ্ত হয় তখনই আল্লাহর পথ দেখানোর জন্য অর্থাৎ হেদায়েতের উদ্দেশ্যে আল্লাহর ওলীগণ পৃথিবীতে আগমন করে থাকেন । ইসলাম প্রচার ও সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে ওলী , দরবেশ ও উলামায়ে কেরামের অবদান আমাদের ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে রয়েছে । এমনি একজন স্বরণীয় ও বরণীয় ব্যক্তি হচ্ছেন হযরত মাওলানা কারামাত আলী জৈনপুরী (রহঃ) যার শিক্ষা , সাধনা , চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং অবদান আমাদের জাতীয় ইতিহাসের গতিধারাকে বিপুলভাবে প্রভাবিত করে ।
ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) এর বক্তধারায় স্নাত মাওলানা শাহ কারামাত আলী জৈনপুরী ভারতের উত্তর প্রদেশের অন্তর্গত জৈনপুর শহরের মোল্লাটোলা মহল্লায় ১২১৫ হিজরীর ১৮ই মহরম জন্মগ্রহণ করেন । ইংরেজী জন্ম সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য জানা যায়নি । তবে বিভিন্ন বই পুস্তকে তাঁর ইংরেজী জন্ম তারিখ ১১ই জুন , ১৮০০ খৃস্টাব্দ উল্লেখ আছে । তাঁর পূর্বপুরুষগন সৌদি আরব থেকে বাগদাদে চলে আসেন । তাঁর বাবার নাম ছিল মৌলভী আবু ইব্রাহীম শেখ মুহাম্মাদ ইমাম বখশ এবং মায়ের নাম ছিল মোসাম্মৎ বসতি বিনতে শায়খ লুৎফে আলী । তাঁর উভয়ে ১২০০ হিজরীর প্রথম দিকে সুদূরে বাগদাদ থেকে জৈনপুরী শহরে মোল্লাটোলায় এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন । জৈনপুর শহরের মোল্লাটোলা মহল্লাটি প্রাচীনকাল থেকেই আলেম ওলামাদের বাসস্থান হিসেবে সুপরিচিত । উল্লেখ্য মাওলানা কারামাত আলী জৈনপুরী (রহঃ) এর দাদা শায়খ জারুল্লাহ ও দাদী মোসাম্মৎ জামিলা বিবির একমাত্র ছেলে শেখ ঈমাম বখশ একজন কামেল বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন । জীবনধারণের জন্য তিনি জৈনপুর কালেক্টরেট এ শারেস্তাদারের চাকুরী নেন । মাওলানা কারামাত আলী জৈনপুরী (রহঃ) এর ছোট ভাই শাহ রজব আলী (রহঃ) একজন বড় ফকির ছিলেন । তাঁরা উভয়ই হযরত সাইয়্যেদ আহমাদ বেরেলভী (রহঃ) এর খলিফা ছিলেন । হযরত শাহ কারামাত আলী জৈনপুরী (রহঃ) বংশানুক্রমে সাঁইত্রিশ পুরুষ গিয়ে ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) এর সাথে মিলিত হয়েছেন ।

নছবনামা (বংশ পরিচিতি), হযরত আবু বকর (রাঃ) থেকে হযরত মাওলানা কারামাত আলী জৈনপুরী (রহঃ) পর্যন্ত—–

আমিরুল মু’মিনীর হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) তাঁরই ছেলে হযরত মুহাম্মাদ (রাঃ) তাঁরই ছেলে হযরত খাজা আহাম্মদ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা ইব্রাহীম (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা আবু মুহাম্মাদ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা আওহাদ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা ওমর (রহঃ) তাঁরই ছেলে হযরত খাজা আবু আলী (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা আবু সাহাম (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা নাসিরুদ্দিন (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা সায়ফ উদ্দিন (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা মাসআব (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা মুজাফফর (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা ছুফি (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা আব্দুল্লাহ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা বায়েজীদ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা শামছুদ্দীন (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা শায়ফোল্লাহ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা নাজীব (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত খাজা শায়খ নাসিরুদ্দিন (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত কাজী নেজামুদ্দিন (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ আশরাফ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ বোরহানুদ্দি (রহঃ), তাঁরই ছেলে হাফেজ হযরত শায়খ (রহঃ), তাঁরই ছেলে ছায়াদাল্লাহ হাফেজ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত মাখদুম শাহলাজ হাফেজ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ মুহাম্মাদ হাফেজ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ হামীদ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ আবুল ফাতহ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত হযরত আব্দুল্লাহ (রহঃ) তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ আবু মুহাম্মাদ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ মুহাম্মাদ আলী (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ মুহাম্মাদ ফাজেল (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ নাজিবুদ্দিন (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ গুল মুহাম্মাদ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত শায়খ আবু ইব্রাহীম মুহাম্মাদ ইমাম বখশ (রহঃ), তাঁরই ছেলে হযরত মাওলানা শাহ্‌ ছুফি কারামাত আলী জৈনপুরী (রহঃ) । (সুত্রঃ আজিফায়ে হাছানীয়া, পাতা ৩০-৩৬)
পরবর্তী পর্ব আসার অপেক্ষায় থাকুন…!!

Comments

Popular posts from this blog

নক্ শেবন্দিয়া ও মোজাদ্দেদিয়া তরিকার শাজরা

        শাজ্ রায়ে তরিকায়ে নক্ শবন্দিয়া                মোজাদ্দাদিয়ার বিবরণ আবুল হাসনাত মোহাম্মদ আবদুল হাইর পীরঃ হজরত মাওলানা শাহ সূফি হাফেজ মোহাম্মদ আবদুর রব সাহে...

আল্লামা রেজভি সাহেব

পরিচয়ঃ  আধ্যাত্মিক সাধনার ক্ষেত্রে তিনি উজ্জল নক্ষত্র ছিলেন। যিনি শরীয়ত ও মারেফাতের অতি উচ্চ মর্যাদাশালী আল্লাহর অলী। তাঁর পারিবারিক সূত্র থেকে কিংবা কোন দালিলিক ভিত্তি থেকে তাঁর জন্মসাল ও তারিখ সম্পর্কে নির্ভর যোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায় নি। তাঁর জীবনী প্রকাশে আত্মনিবেদিত দীর্ঘদিন তাঁর সান্নিধ্য পাওয়া মোশাররফ ভুইয়া জানান তাঁর জন্ম হয়েছিল বৈশাখ মাসের এক তারিখ।সর্বশেষ ধারণা করা হয় তিনি হিজরী ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষের দিকে প্রায় ১২৮০ হিজরী সনে মোজাদ্দেদে জামান, ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভী সুন্নী আল ক্বাদেরী মাদ্দা জিল্লুহুল আলী বাংলাদেশের ময়মহনসিংহ জেলার লংঙ্কাখলা গ্রামে শুভাগমন করেন। যিনির পিতা ছিলেন একজন সুযোগ্য আলেম, আল্লামা মাওলানা শহর আলী রেজভী সুন্নী আল ক্বাদেরী এবং মাতার নাম আলিমা আক্তার রেজভী। আল্লামা রেজভী সাহেব হুজুর কেবলা এমন এক যুগ সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশের জমিনে আগমন করেন, যখন ইংরেজ শাসন করছিল এই ভারত উপমহাদেশে। মুসলমানদের সমাজে রাসুলে পাকের হাজার হাজার সুন্নাত দাফন করে নতুন নতুন বিদাত চালু করে। এই যুগ সন্ধিক্ষণে তিনি বাতিল ফেরকাদের সাথে মুনাজারা করে হাজার ও ম...

আল্লামা রেজভি সাহেব ২

দুনিয়া থেকে পর্দা গ্রহণের বেলায় কারামাতঃ   মোজাদ্দেদে জামান, ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা গাজী আকবর আলী রেজভী সুন্নী আল ক্বাদেরী মাদ্দা জিল্লুহুল আলী  হুজুর কেবলার দুনিয়া থেকে পর্দা করার আগে জলন্ত কারামত প্রকাশ পেয়েছে। “কারামাতুল আউলিয়াই হাক্কোন” (আকাইদে নছফী, আল্লামা সাদুদ্দিন তাফতাজানি রহঃ) অর্থাৎ অলি আল্লাহরগনের কারামত সত্য। ১)  তিনি আগেই বলতেন যে, আমি রবিবারে পর্দা করবো, ঠিকই তিনি রবি বারে পর্দা করেছেন। ২)  তিনি পর্দা করার আগের দিন,অর্থাৎ শনিবার দিন, তিনির নাতি মুফতি কুদ্দুস রেজভী, মুহাম্মদ রেজভী, মাওলানা বদরুল আমিন রেজভী, সহ আরো অনেকেই ছিল তাদেরকে ডাকিয়া বলিলেন, তোমরা শোন আগামি কাল ঈদের দিন। আর তোমরা খাসী ও আবাল কুরবানী দিও না। আর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর সুন্নতকে শক্ত ভাবে আকড়ে ধরবে। ৩)  তিনি পর্দা করার আধ ঘন্টা আগেই বলে দিলেন যে, আমি আধ ঘন্টার ভিতরে পর্দা করবো, ঠিকই তিনি আধ ঘন্টার ভিতরে পর্দা করলেন। ৪)  তিনির গোসল করাইলেন আল্লামা মুফতী উহিদুর রহমান রেজভী ও আল্লামা গাজী মান্নান জিহাদী , মুফতী রমজান আলী রেজভী ও পাশে ছিলেন। যখন বাবা...